ক্রনিক কিডনি ডিজিজ (Chronic Kidney Disease) – একটি নীরব বিপদ!

 ক্রনিক কিডনি ডিজিজ বা সিকেডি (CKD) হলো একটি দীর্ঘমেয়াদী কিডনি সমস্যা, যেখানে কিডনির কার্যক্ষমতা ধীরে ধীরে হ্রাস পেতে থাকে। এই রোগ অনেক সময় নীরবে শুরু হয় এবং লক্ষণ প্রকাশ পেতে পেতে কিডনির অনেকটাই ক্ষতি হয়ে যায়। তাই সময়মতো সচেতনতা ও চিকিৎসা জরুরি।

ক্রনিক কিডনি ডিজিজের লক্ষণসমূহ

  1. অতিরিক্ত ক্লান্তি বা দুর্বলতা
  2. প্রস্রাবে ফেনা বা রক্ত দেখা যাওয়া
  3. পায়ে, মুখে বা চোখের চারপাশে ফোলা
  4. রাতের বেলা ঘন ঘন প্রস্রাব
  5. অরুচি, বমি ভাব বা গ্যাসের সমস্যা
  6. রক্তচাপ বৃদ্ধি
  7. মনোযোগে সমস্যা বা বিভ্রান্তি

ক্রনিক কিডনি ডিজিজের কারণ

  1. ডায়াবেটিস (সর্বোচ্চ ঝুঁকি)
  2. উচ্চ রক্তচাপ
  3. দীর্ঘমেয়াদী ইউরিনারি ইনফেকশন
  4. কিডনির জন্মগত সমস্যা
  5. অতিরিক্ত ওজন ও অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপন
  6. ধূমপান ও অ্যালকোহল সেবন

রোগ নির্ণয় পদ্ধতি

সাধারণত নিম্নোক্ত পরীক্ষাগুলোর মাধ্যমে সিকেডি নির্ণয় করা যায়:

  • ইজিএফআর (eGFR) – কিডনির কার্যক্ষমতা মাপার পরীক্ষা
  • ইউরিন টেস্ট – প্রোটিন বা রক্তের উপস্থিতি যাচাই
  • রক্ত পরীক্ষা – ক্রিয়াটিনিন বা ইউরিয়া লেভেল পরীক্ষা
  • ইমেজিং (আল্ট্রাসনোগ্রাফি/সিটি স্ক্যান)

চিকিৎসা ও প্রতিকার

সিকেডি সম্পূর্ণরূপে নিরাময়যোগ্য না হলেও, সময়মতো ব্যবস্থা গ্রহণ করলে রোগের অগ্রগতি ধীর করা যায়:

  • ডায়াবেটিস ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা
  • কিডনির উপযোগী ডায়েট মেনে চলা (কম লবণ, কম প্রোটিন)
  • নিয়মিত চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ
  • ধূমপান ও অ্যালকোহল পরিহার
  • ওষুধ সঠিকভাবে গ্রহণ

গুরুতর ক্ষেত্রে ডায়ালাইসিস অথবা কিডনি ট্রান্সপ্লান্ট প্রয়োজন হতে পারে।

প্রতিরোধে যা করবেন

  • স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস বজায় রাখুন
  • পর্যাপ্ত পানি পান করুন
  • নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করুন
  • ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন
  • ব্যায়াম করুন ও স্ট্রেস কমান

উপসংহার

ক্রনিক কিডনি ডিজিজ একটি ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পাওয়া রোগ, যার প্রাথমিক লক্ষণ অনেক সময় উপেক্ষিত হয়। তাই সময়মতো সচেতনতা, স্বাস্থ্যপরীক্ষা ও সঠিক জীবনযাপনই পারে এই বিপদের হাত থেকে বাঁচাতে। আপনার কিডনির যত্ন নিন, সুস্থ জীবন বেছে নিন।

Post a Comment

0 Comments