কিডনি স্টোন কি (Kidney Stones)?
কিডনি স্টোন বা কিডনিতে পাথর হল এক ধরনের কঠিন পাথরের মতো পদার্থ, যা কিডনির ভিতরে খনিজ এবং লবণের জমাট থেকে তৈরি হয়। সাধারণত শরীরের পানি কম থাকলে অথবা কিছু নির্দিষ্ট ধরণের খাবার অতিরিক্ত পরিমাণে খাওয়ার কারণে এই সমস্যা দেখা দেয়।পুরুষ ও নারীদের মধ্যে এই রোগ হতে পারে, তবে সাধারণত পুরুষের মধ্যে এই সমস্যা একটু বেশি দেখা যায়। সময়মতো চিকিৎসা না নিলে এটি মূত্রনালীর বিভিন্ন অংশে বাধা সৃষ্টি করে তীব্র ব্যথা, সংক্রমণ বা কিডনির ক্ষতি করতে পারে।
কিডনি স্টোন হওয়ার সাধারণ কারণ
- ·
অপর্যাপ্ত পানি পান
- · অতিরিক্ত লবণ ও প্রোটিনযুক্ত খাবার খাওয়া
- · মূত্রে ক্যালসিয়াম, অক্সালেট বা ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বেড়ে যাওয়া
- · পারিবারিক ইতিহাস
- · স্থূলতা ও ডায়াবেটিস
- · কিছু ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
লক্ষণ (Kidney Stone Symptoms)
কিডনি স্টোনের ছোট পাথর হলে অনেক সময় কোন লক্ষণ থাকে না। কিন্তু বড় হলে নিচের উপসর্গ দেখা যায়:
- · পিঠ, কোমর বা সাইডে তীব্র ব্যথা
- · প্রস্রাবে জ্বালা বা ব্যথা
- · প্রস্রাবে রক্ত দেখা
- · বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া
- · বার বার প্রস্রাবের চাপ
- · প্রস্রাব করতে কষ্ট
কিডনি স্টোনের ধরণ (Types of Kidney Stones)
- ক্যালসিয়াম স্টোন (সবচেয়ে সাধারণ)
- স্ট্রুভাইট স্টোন (ইনফেকশনের কারণে হয়)
- ইউরিক অ্যাসিড স্টোন (অনেক মাংস খেলে বাড়ে)
- সিস্টিন স্টোন (জেনেটিক কারণ)
কীভাবে নির্ণয় করা হয়? (Diagnosis)
- আল্ট্রাসনোগ্রাফি (Ultrasound)
- CT স্ক্যান (CT Scan)
- এক্স-রে (X-ray)
- রক্ত ও মূত্র পরীক্ষা
চিকিৎসা (Treatment
for Kidney Stones)
কিডনি স্টোনের আকার ও অবস্থার উপর নির্ভর করে চিকিৎসা হয়। সাধারণত:
- পানি বেশি খাওয়া (ছোট স্টোন হলে বেরিয়ে যেতে পারে)
- মেডিসিনে স্টোন গলিয়ে ফেলা
- ESWL (Shock Wave Lithotripsy) — শব্দ তরঙ্গে স্টোন ভেঙে ফেলা
- URS (Ureteroscopy) — ক্যামেরা দিয়ে স্টোন তুলে ফেলা
- পিসিএনএল (PCNL) — বড় স্টোন অপারেশনে ফেলে দেওয়া
কীভাবে রোধ করবেন? (Prevention Tips)
- দৈনিক অন্তত ২-৩ লিটার পানি পান করু।
- অতিরিক্ত নুন, চিনি ও প্রোটিন এড়িয়ে চলুন।
- সবজি, ফল, লো-অক্সালেট খাবার খান।
- নিয়মিত ওজন নিয়ন্ত্রণ করুন।
- চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ক্যালসিয়াম বা ভিটামিন-ডি সাপ্লিমেন্ট খাবেন না।
উপসংহার
কিডনি স্টোন বর্তমান সময়ে খুবই সাধারণ একটি স্বাস্থ্য সমস্যা হলেও সচেতনতা এবং কিছু জীবনযাত্রা পরিবর্তন করলেই এড়ানো সম্ভব। সমস্যা হলে দেরি না করে ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
0 Comments